সাপ্তাহিক লেকচারের পাশাপাশি ২০১৬ সাল থেকে ক্লাব নিয়মিতভাবে আয়োজন করে আসছে বিশেষ মাসিক লেকচার। মাসিক লেকচারে বক্তা ও আলোচক হিসেবে থাকেন দেশের প্রখ্যাত বিদ্ধৎজন। তরুণদের পাশাপাশি অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক, গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার, সরকারী প্রতিষ্ঠানের গবেষণা কর্মকর্তা, স্বাধীন গবেষক কিংবা কোন প্রবীণ জ্ঞানানুরাগী। এক কথায়, মাসিক লেকচার হয়ে উঠে নবীন-প্রবীণ বিদ্যোৎসাহীদের মিলনমেলা। ২০ এপ্রিল ২০১৯ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়স্থ আর সি মজুমদার অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে ক্লাবের ৩০তম মাসিক পাবলিক লেকচার। “নানা রূপে নজরুল” শীর্ষক মাসিক পাবলিক লেকচার প্রদান করেন প্রখ্যাত গবেষক ড. গোলাম মুরশিদ। সভাপতি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর-এর সাবেক মহাপরিচাক ড. এনামুল হক। ক্লাবের অন্যান্য মাসিক লেকচারে বক্তা ও সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইতিহাসবিদ ও বাংলাপিডিয়ার প্রধান সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, বিশিষ্ট রাষ্ট্রচিন্তক ড. মিজানুর রহমান শেলী, নগরবিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, সমাজবিজ্ঞানী ও অর্থনীতিবিদ ড. আকবর আলি খান, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাক হিলস্ ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আহরার আহমদ, নগর ইতিহাসবিদ ড. শরীফ উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান, প্রতœতাত্তি¡ক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতœতত্ত¡ বিভাগের অধ্যাপক ড. সুফি মুস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) স্থাপত্য বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. ফরিদা নীলুফার, একই বিভাগের অধ্যাপক ড. শহীদুল আমিন, প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও ড্যাফোডিল গ্রুপের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিক্ষা উদ্যোক্তা মো.সবুর খান, বিশ্ব ব্যাংকের বাংলাদেশ শাখার মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড.জাহিদ হোসেন, দৃক পিকচার লাইব্রেরি ও পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট-এর প্রতিষ্ঠাতা আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলম, ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজের সাম্মানিক অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী; ব্র্যাক-এর ভাইস চেয়ার আহমদ মোশ্তাক রাজা চৌধুরী প্রমুখ।
রিডিং ক্লাবের সবচেয়ে অ্যামবিশাস্ প্রোগ্রাম সম্ভবত এটি। প্রতিমাসে সংবিধান বিষয়ক একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। আরিফ খান বাংলাদেশের সংবিধান বিশেষজ্ঞ। তাঁর তত্ত্বাবধানে এই প্রোগ্রাম বাস্তবায়নের কাজ চলছে। ২০১৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি এই প্রোগ্রামের আওতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর.সি. মজুমদার অডিটোরিয়ামে সংবিধান বিষয়ে ১ম কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। কর্মশালায় উপস্থিত প্রায় সত্তর জন অংশগ্রহণকারীকে সম্পূর্ণ সংবিধান মুখস্থ করার অভূতপূর্ণ ও অনন্যসাধারণ সব কৌশল শেখানো হয়। ভীষণ সফল একটি কর্মশালা ছিল এটি। অংশগ্রহণকারীরা মন্ত্রমুগ্ধের মতো টানা চার ঘণ্টাব্যাপী সংবিধান মুখস্থ করার টেকনিক রপ্ত করেছেন। মাত্র কয়েকটি মজার মজার কৌশল প্রয়োগ করে যে সম্পূর্ণ সংবিধানের ওপর এমন অব্যর্থ দখল অর্জন করা যায় তা দেখে উপস্থিত অংশগ্রহণকারীরা অবাক হয়েছেন! তারা সকলেই রিডিং ক্লাবের এই প্রচেষ্টা ও উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। ২০১৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নওয়াব আলী সিনেট ভবন, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রসহ বিভিন্ন ভেন্যুতে ক্লাব আয়োজিত প্রায় ৪০টি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ২০১৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর কর্মশালাটি আয়োজন করা হয়েছে ধানমন্ডির তাজউদ্দীন পাঠশালায়
উল্লেখ্য যে, কোনো কিছু ‘মুখস্থ’ করা বড় কোনো গুণ বা অর্জন নয়। তবে ত্রিশলক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত রাষ্ট্রপরিচালনার মূল দলিল ‘সংবিধান’ মুখস্থ থাকা একটি মহান ও অনন্যগুণ। সংবিধান জানা থাকা হলো নাগরিক হিসেবে স্মার্টনেসের প্রমাণ। এই মুহূর্তে দশ জনকে বিশেষ ও কঠোর প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে কীভাবে সম্পূর্ণ সংবিধান মুখস্থ ও কীভাবে তা অন্যকে শেখানো যাবে এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এই দশজনকে নিয়ে একটি টিম গঠন করা হবে। দশজন হবে এই প্রোগ্রামের কোর টিম বা গ্রুপ। এই দশ জন যথাযথভাবে প্রস্তুত হয়ে গেলে প্রোগ্রামের দ্বিতীয় স্তরের কাজ শুরু হবে।
দ্বিতীয় পর্যায়: এই স্তরের উদ্দেশ্য হলো ঢাকা মহানগরীর প্রত্যেকটি কলেজের ছেলেমেয়েদের সংবিধান শিক্ষা দেওয়া। নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকের সংবিধান বিষয়ে জ্ঞান থাকা অপরিহার্য। রিডিং ক্লাবের দশজনের টিমটি সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ছেলেমেয়েদের সংবিধান শিক্ষা দিবে।
তৃতীয় পর্যায়: এই স্তরে রিডিং ক্লাব সম্পূর্ণ সংবিধান মুখস্থকারীর সংখ্যা আরো বাড়াবে। এবং স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে তরুণ-তরুণীদের সংবিধান শিক্ষা দেওয়ার কার্যক্রম সারা বাংলাদেশের স্কুল-কলেজগুলোতে বিস্তৃত করবে।
অসামান্য আত্মত্যাগের বিনিময়ে এবং নাগরিকদের জন্য রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত’ করার এক মহিমান্বিত আকাক্সক্ষা নিয়ে অর্জিত বাংলাদেশের প্রতি দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্র হিসেবে আমরা সংবিধানকে বেছে নিয়েছি। আপনিও এই সুমহান উদ্যোগে অংশগ্রহণ করুন।