৪৯৭ তম সাপ্তাহিক পাবলিক লেকচার
বিষয়: মধুসূদনের নাটকে আধুনিকতা
বক্তা- তাসবীর আহমেদ আবীর
তারিখ: ৮ এপ্রিল, ২০২৩
বেলগাছিয়া রঙ্গমঞ্চে রামায়ণ তর্করত্নের লেখা রত্নাবলী নাটকের অভিনয় দেখে বিরক্ত হন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। সেই বিরক্তি থেকে বাংলা নাটক রচনায় নিজেকে নিয়োজিত করেন তিনি। তার চেষ্টায় নাটকে ইউরোপীয় নাট্যরীতির অনুপ্রবেশ ঘটেছে। সংলাপে ব্যবহার করেছেন অমিত্রাক্ষর ছন্দের। একসময় তিনি হয়ে উঠেন বাংলা নাটকের আধুনিকতার ঘোষক। মধুসূদন বাংলা নাটকের এমন এক পথরেখা তৈরি করে দিয়েছিলেন, যা পরবর্তী বহু নাট্যকার অনুসরণ করেছেন। পূর্ণাঙ্গ নাটক, ঐতিহাসিক ট্র্যাজেডি নাটক এবং প্রহসন রচনায় মধুসূদন বিচিত্র প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন।
মধুসূদনের প্রথম নাটক ‘শর্মিষ্ঠা’, যেখানে ঈর্ষা, কাম ও ত্রিভূজ প্রেমির উপস্থিতি লক্ষণীয়। ব্যক্তিত্বময় নারী চরিত্রের উপস্থিতি, পাশ্চাত্য রীতির প্রভাব এই নাটকে ফুটে উঠেছে। ‘একেই কি বলে সভ্যতা?’ এবং ‘বুড় শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ নামে মধুসূদন দত্ত দুইটি প্রহসন রচনা করেন, যেখানে তার সূক্ষ্ম দৃষ্টিভঙ্গি, সমাজ সচেতনতা এবং রসবোধ তুমুলভাবে আমাদের নাড়া দেয়। ‘একেই কি বলে সভ্যতা?’ প্রহসনে ইয়ং বেঙ্গলের জীবনাদর্শ ও জীবনাচারের সুতীক্ষ্ণ কটাক্ষ, তারুণ্যের অনাচারকে সমালোচনা করেন। প্রাচীনপন্থীদের অন্তঃসারশূন্যতাকে উপজীব্য করে লিখিত হয়েছে ‘বুড় শালিকের ঘাড়ে রোঁ’। একজন বকধার্মিক বৃদ্ধ জমিদারের সীমাহীন লাম্পট্য আর কলুষিত জীবনের ফিরিস্তি এটি।