বাংলাদেশের আলপনা: কৃষিভিত্তিক সমাজে শিল্পচেতনা
মে ২৪, ২০২৩

৪৯৪ তম সাপ্তাহিক পাবলিক লেকচার

বিষয়: বাংলাদেশের আলপনা: কৃষিভিত্তিক সমাজে শিল্পচেতনা

বক্তা: সঞ্জয় চক্রবর্তী

তারিখ: ১০ মার্চ, ২০২৩

সুপ্রাচীনকাল থেকেই বাংলার সমাজ কৃষিভিত্তিক। কৃষিই এই অঞ্চলের জীবিকার মূল উৎস। ফলে এদেশের সংস্কৃতির সঙ্গে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে কৃষির নানা উপাদান, তৈরি হয়েছে এক ধরনের শিল্পচেতনা। বলা হয়ে থাকে, যেকোনো শিল্পই সার্বিক অর্থে জীবনকে কেন্দ্র করে। 

সভ্য হওয়ার প্রাক্কালে মানবসমাজ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। প্রথমটি, কৃষিভিত্তিক সমাজ, দ্বিতীয়টি যাযাবর। কৃষি সমাজের মাধ্যমে নব্য প্রস্তর যুগের সূচনা হয়। এ সমাজের শিল্প নিদর্শনে মাতৃকা মূর্তি উপস্থাপনের এক ধরনের প্রবণতা লক্ষ করা যায়। Venus of Willendorf, Venus of Laussel, চন্দ্রাকেতুগর--এসব মূর্তিতে নারীকে উর্বরতার প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অর্থাৎ, নারীর সন্তান জন্মদানের সাথে প্রকৃতির ফুল, ফসলের সমৃদ্ধকে একত্রিত করে ফেলা হয়েছে।

সনাতন ধর্মে লক্ষ্মী দেবীর উপস্থাপনা আটপৌরে। এ যেন গ্রামের সাধারণ একজন নারী। মূলত আলপনা দেওয়া হয় লক্ষ্মী পূজায়। লক্ষ্মী যেমন অর্থ, সম্পদ, ঐশ্বর্যের প্রতীক, তেমনি আলপনায় চিত্রিত ফুল, ফল, লতা, পাতা বাঙালির চিরকালীন কৃষিভিত্তিক সমাজের ঐশ্বর্যের দিকটিকে তুলে ধরা হয়েছে। বঙ্গে অঙ্কিত আলপনায় দেখা যায় জমি, কৃষিক্ষেত, ধান, ধানের শীষ, কাস্তে, কোদাল সর্বোপরি কৃষিকাজের সাথে সম্পর্কিত যাবতীয় যন্ত্রপাতির উপস্থাপনা। 

আধুনিক সময়ে এসে আলপনার আকার, বিষয়বস্তুতে বড় ধরনের পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। এক্ষেত্রে নাগরিক জীবনকে নতুনভাবে উপস্থাপনার প্রয়াস চলে। অর্থাৎ, ধর্ম সংশ্লিষ্টতা এবং ঐতিহ্যগতভাবে চলে আসা কৃষিভিত্তিক সমাজের বিপরীতে এখানে স্থান পায় নগর এবং ইহজাগতিকতা।

Recorded Lecture: https://www.youtube.com/watch?v=I-nW2Ay6WEI

cross-circle