রিডিং ক্লাব ট্রাস্টের উদ্দেশ্য
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে গভীর পাঠাভ্যাস, গবেষণা ও আলোচনার মাধ্যমে চিন্তাচর্চার সংস্কৃতি গড়ে তোলা।
২. দেশের বুদ্ধিবৃত্তিক নেতৃত্ব গ্রহণের জন্য তরুণ শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত ও অনুপ্রাণিত করা।
৩. বাংলাদেশে একটি জ্ঞানভিত্তিক, উদার ও গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণের প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
রিডিং ক্লাব ট্রাস্ট কী করে
১. প্রধানত পাবলিক লেকচার আয়োজন করে। ইতোমধ্যে ৪৫০টির বেশি পাবলিক লেকচার সফলভাবে আয়োজন করেছে।
২. বাংলাদেশের প্রথিতযশা গুণিজন এবং প্রতিভাবান তরুণ গবেষক-চিন্তকদের একটি প্ল্যাটফর্মে একত্রিত করে।
৩. সামাজিক বিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা আয়োজন, পরিচালনা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা-সহযোগিতা প্রদান করে।
রিডিং ক্লাব প্রতিষ্ঠার ইতিকথা
২০০৫ সালে শুরু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে প্রথমে অনানুষ্ঠানিক, ক্রমে নিয়মিত, এক আড্ডা। অংশগ্রহণকারীদের কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, কেউ সদ্য বেরিয়েছেন পাশ করে। দাঁড়িয়ে, চায়ে চুমুক দিতে দিতে, সন্ধ্যা পেরিয়ে এই আড্ডা চলতো রাত নটা-দশটা অবধি। আড্ডার প্রধান জ্বালানি সারাদিনের, প্রধানত লাইব্রেরিতে, পাঠ। নিজের পাঠাভিজ্ঞতা, এর ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও সারৎসার অপরের সঙ্গে লেনদেন; এর সূত্র ধরে কথার পিঠে কথা, তর্ক-প্রতর্ক, এবং গাঁজন-প্রক্রিয়া। আলোচনার বিষয় বিচিত্র, বহুগামীÑসমাজ, রাষ্ট্র, ধর্ম, রাজনীতি কিংবা ইতিহাস।
একটা সময় স্থির হয় একটা নোঙরÑবঙ্গদেশ, হাজার বছরের বিবর্তন পেরিয়ে ১৯৭১ সালের স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ। ক্রমেই আবিষ্কৃত হয়Ñবাঙালির সংঘবদ্ধ চিন্তাচর্চার ইতিহাস বেশ পুরনো নয়, পূর্ববঙ্গের ক্ষেত্রে তো একবারেই নয়। তাই এর গড়ন বড় কাঁচা, ভঙ্গুর। আমাদের যে-কোনো আলোচনা বিতর্কের গ-ি পেরিয়ে গড়ায় বাকযুদ্ধে, যে-কোনো মূল্যে তর্কে জেতার প্রবণতায়। এর অনিবার্য পরিণতি ভাঙন। আমাদের যে-কোনো সামাজিকসাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান তাই টিকে থাকে বড়জোর গড়ে পাঁচ বছর। তাই দরকার ব্যাকরণ। পাঠের ব্যাকরণ, চিন্তার ব্যাকরণ, চিন্তাপ্রকাশের (লেখা কিংবা বলা) ব্যাকরণ। দরকার সংঘবদ্ধ জ্ঞানান্দোলন। এভাবেই তৈরি হয় রিডিং ক্লাবের ভ্রুণ।